আপনি যখন রেস্টুরেন্ট বা ফাস্ট ফুডের দোকানে খেতে যান, তখন খাবারের বিলের সঙ্গে মূল্য সংযোজন কর বা ভ্যাটের টাকা কেটে রাখা হয়। আপনি সরকারকে ভ্যাট দিচ্ছেন, কিন্তু বিক্রেতা আপনার টাকা সঠিকভাবে জমা দিচ্ছেন কি না, তা বুঝবেন কীভাবে? তাই খাবার বা অন্য যেকোনো বিল পরিশোধের সময় একটু খেয়াল করলেই বুঝতে পারবেন, ভ্যাটের টাকা জমা পড়ল কি না। এ কারণে আপনার জন্য কিছু টিপস আছে। কারণ, অনেক সময় আপনি ঠিকই ভ্যাট দিয়ে যাচ্ছেন, কিন্তু তা সরকারি কোষাগারে জমা পড়ছে না। অনেক দোকানদার ভুয়া চালান আপনার হাতে ধরিয়ে দিতে পারেন।
গত তিন মাসে ঢাকা ও চট্টগ্রাম শহরের বিভিন্ন ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) ইলেকট্রনিক ফিসক্যাল ডিভাইস (ইএফডি) বা ভ্যাটের মেশিন বসানো শুরু করেছে। ইতিমধ্যে এক হাজারের বেশি প্রতিষ্ঠানে ইএফডি মেশিন বসানো হয়েছে।
এবার দেখা যাক, আপনি ভ্যাটযোগ্য পণ্য বা সেবা কিনে রসিদ বুঝে পাওয়ার সময় কী দেখবেন। গত তিন মাসে ঢাকা ও চট্টগ্রাম শহরের বিভিন্ন ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) ইলেকট্রনিক ফিসক্যাল ডিভাইস (ইএফডি) বা ভ্যাটের মেশিন বসানো শুরু করেছে। ইতিমধ্যে এক হাজারের বেশি প্রতিষ্ঠানে ইএফডি মেশিন বসানো হয়েছে। প্রথমেই দেখে নেবেন ইএফডি বসানো হয়েছে এমন সাইনবোর্ড আছে কি না। এরপর ওই দোকান থেকে পণ্য বা সেবা কিনলে যে রসিদ দেওয়া হবে, তাতে একটি বারকোড থাকবে। এখন শহুরে জীবনে প্রায় সবাই স্মার্টফোন ব্যবহার করেন, তাঁরা সহজেই বারকোড স্ক্যান করে এনবিআরে দেওয়া ওই প্রতিষ্ঠানের তথ্য জানতে পারবেন। এ ছাড়া ওই রসিদে মূসক চালান ৬ দশমিক ৩–এর কথা উল্লেখ থাকবে। এমনকি পণ্য বা সেবার মূল্যের কত শতাংশ ভ্যাট কাটা হয়েছে তা–ও লেখা থাকবে। যদি পণ্য মূল্যের সঙ্গে ভ্যাট অন্তর্ভুক্ত করা থাকে, তা–ও উল্লেখ থাকবে।
এবার আসা যাক, যেসব প্রতিষ্ঠানে ইএফডি মেশিন নেই, সেখানে কী করবেন? সাধারণত এসব দোকানের দৃশ্যমান স্থানে ভ্যাট নিবন্ধনের সনদ ঝুলিয়ে রাখার বাধ্যবাধকতা আছে। যদি থাকে তাহলে বুঝে নেবেন, ওই দোকানের ভ্যাট নিবন্ধন নেওয়া আছে। এসব দোকানে দুই ধরনের ভ্যাটের রসিদ দেওয়া হয়। যেমন আড়ং, স্বপ্নের মতো দোকানে ইএফডি মেশিনের মতো মেশিন ব্যবহার করা হয়। এসব মেশিনের মাধ্যমে দেওয়া রসিদে ১৩ সংখ্যার ভ্যাটের নিবন্ধন নম্বর থাকে। তবে অভিযোগ আছে, অনেক দোকানের রসিদে ৯ বা ১১ সংখ্যার ভ্যাট নিবন্ধন নম্বর দিয়েই বলা হয়, ভ্যাট নেওয়া হয়েছে। মনে রাখবেন, পুরোনো এসব নম্বরের এখন আর কার্যকারিতা নেই। আপনার কাছে ভ্যাট নিয়ে সরকারি কোষাগারে জমা না দেওয়ার জন্য এটি করা হয়।
আরেক ধরনের দোকান আছে, যেখানে এখনো ছাপানো মূসক চালানে হাতে লিখে দেওয়া হয়। এসব চালানের রং সাধারণত সাদা ও নীল হয়। অন্য রঙেরও হতে পারে। আগে এসব চালানের কপি সংশ্লিষ্ট ভ্যাট অফিস থেকে প্রত্যয়িত করার বাধ্যবাধকতা ছিল। নতুন ভ্যাট আইনে তা উঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। তবু হাতে লেখা এসব চালান বুঝে নেবেন। চালানে ভ্যাট নিবন্ধন নম্বর, পণ্যের বিবরণ, দাম, ভ্যাট, বিক্রেতার স্বাক্ষর ইত্যাদি থাকবে।
সম্প্রতি গ্রাহকের অভিযোগের ভিত্তিতে কয়েকটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে অভিযান চালান ভ্যাট গোয়েন্দারা। এসব ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানে ভুল ভ্যাট চালান বা ভ্যাটের চালান না দেওয়ার প্রমাণ পেয়েছেন তাঁরা।